1. ourpositivebangladesh@gmail.com : Ourpositive Bangladesh : Ourpositive Bangladesh
রাজশাহীর সেই ডলি রানীর শাস্তি ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ | আমাদের পজিটিভ বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
নোটিস :
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন 01521725591 অথবা what's up মেসেজ করুন

রাজশাহীর সেই ডলি রানীর শাস্তি ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ

  • প্রকাশ কাল : শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২
  • ৩৫৩ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :

দীর্ঘদিন ধরে এমপিও ও পদোন্নতিসহ নানা কাজে অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রাজশাহী অঞ্চলের কলেজ শিক্ষকদের। এসব অনিয়ম ও হয়রানির ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগ রাজশাহী অঞ্চলের সহকারী প্রোগ্রামার ডলি রানী পালের সম্পৃক্ততা মিলেছে।

এই ঘটনায় গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে বরিশাল অঞ্চলে বদলির আদেশ দিয়ে সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন সেক্টর ইনভেস্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। ওই আদেশে সই করেন সেসিপ-এর যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক প্রফেসর ড. সামসুন নাহার। ডলি রানী পাল সেসিপের আওতায় রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এখানকার পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের অনিয়মে সহযোগিতার খবর বেরিয়েছে গণমাধ্যমে।
কিন্তু শাস্তির মুখে পড়েও বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেননি ডলি রানী পাল। অভিযোগ উঠেছে, আগের জায়গায় থাকতে জোর তদবির চালাচ্ছেন তিনি। তাকে ফেরাতে মরিয়া রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক প্রফেসর ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদ।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) মাউশি রাজশাহী কার্যালয়ে গিয়ে পরিচালক ও সহকারী পরিচালককে পাওয়া যায়নি। সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছেন, দুজনেই জরুরি কাজে ঢাকায় গিয়েছেন। ডলি রানীর শাস্তি ঠেকাতে তারা তদবিরে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার একটি সূত্র।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ডলি রানী পালকে শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর সেসিপ প্রকল্পের যুগ্ম গ্রোগ্রাম পরিচালককে চিঠি দেন মাউশির সহকারী পরিচালক (কলেজ-২) তানভীর হাসান।

দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় শাস্তির মুখে পড়েন ডলি রানী পাল। মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক প্রফেসর আমির হোসেনের পত্রের প্রেক্ষিতে এই সুপারিশ করেন সহকারী পরিচালক। গত ২৪ আগস্ট পরিচালক ওই পত্র পাঠান।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মাউশিকে পুরো বিষয় তদন্তের জন্য চিঠি দেয় দুদক।

দুদকের কাছে অভিযোগ ছিল, রাজশাহী অঞ্চলে এমপিওর নামে আড়াই হাজার শিক্ষকের কাছ থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। এমপিও আবেদন বাতিল ও হয়রানির অভিযোগও ছিল এখানে।
এরই প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে মাউশি। সরেজমিন তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল।
এরপর পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ, এমপিওভুক্তি, পদোন্নতি ও উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং হয়রানির অভিযোগ করেন বাংলাদেশ সরকারি শিক্ষক সমিতির রাজশাহী অঞ্চলের সভাপতি ও সম্পাদক।

এর প্রেক্ষিতে এ বছরের ৩০ মার্চ মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক প্রফেসর আমির হোসেনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয়। গত ১২ এপ্রিল রাজশাহীতে এসে সরেজমিন তদন্ত করে যায় কমিটি। গত ২৪ আগস্ট তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুটি অভিযোগের কোনোটিতেই সহকারী প্রোগ্রামার ডলি রানী পালের নাম ছিল না। তদন্তকারী কর্মকর্তারা তবুও কথা বলেন তার সঙ্গে। তার বক্তব্য নেয় কমিটি। এরই প্রেক্ষিতে সর্বশেষ কমিটি ডলি রানী পালের অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে। তার-ই প্রেক্ষিতে ডলি রানী পালকে শাস্তিমূলক বদলির আদেশ দেয়া হয়।

তবে শিক্ষকদের অভিযোগ, যারা এই অনিয়মের হোতা তারা এখনও স্বপদে বহাল আছেন। কিন্তু তাদের সহযোগী ডলি রানী পাল শাস্তির মুখে পড়েছেন। শাস্তির মুখে না পড়ায় ডলিকে বাঁচিয়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে মরিয়া পরিচালক ও সহকারী পরিচালক।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও ডলি রানী পালের মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে এ নিয়ে তার মন্তব্য মেলেনি।
তবে তিনি বরিশাল অঞ্চলে যোগদান করেননি বলে নিশ্চিত করেছেন সেখানকার আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই তার দপ্তরে ওই পদটি শূন্য। তিনি (ডলি রানী পাল) সেখানে যোগদান করার কথা। কিন্তু ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি যোগদান করেননি। যোগদান করবেন কি-না সেই তথ্যও নেই।

মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড. কামাল হোসেন বলেন, তার (ডলি রানী পাল) নামে কখনোই কোনো অভিযোগ ছিল না। সেহেতু তার নামে তদন্ত করারও কথা নয়। হয়তো পরিস্থিতি বুঝতে তার সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কী প্রমাণ পেয়েছেন সেটা জানা নেই।
পরিচালক দাবি করেন, আমার জানা মতে ডলি রানী এমন কাজ করেননি। তিনি বরাবরই পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। তার পুরষ্কার পাবার কথা। কিন্তু তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। অফিস প্রধান হিসেবে পরিচালকের মতামতও নেয়া হয়নি। এসময় তদন্ত কমিটি প্রভাবিত হয়ে পক্ষপাতমূলক তদন্ত করেছে বলেও অভিযোগ করেন প্রফেসর ড. কামাল হোসেন।
তবে তদন্তে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেন মাউশির তদন্ত কমিটির প্রধান এবং মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক প্রফেসর আমির হোসেন।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছিল। তিন জনই আলাদা আলাদা বিষয়ে তদন্ত করেছেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অংশের প্রতিবেদন দিয়েছেন। তদন্ত কিংবা প্রতিবেদন একপেশে হবার কথা নয়।

তিনি আরও বলেন, তারা সরেজমনি তদন্ত করেছেন। কিছু অভিযোগের সত্যতা মিলেছে, কিছু অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সহকারী প্রোগ্রামারের শান্তিমূলক বদলি হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি এই পরিচালক।

এদিকে সহকারী প্রোগ্রামারকে বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে সেসিপের যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক প্রফেসর ড. সামসুন নাহার জানান, ডলি রানী পালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে মাউশি। তাকে শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশ এসেছিল। এর প্রেক্ষিতে ডলি রানী পালকে বদলি করা হয়। কি কারণে তিনি যোগদান করেননি, কখন যোগদান করবেন বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। কেন তিনি আদেশ অমান্য করলেন বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা। সূত্র- ঢাকা পোস্ট

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই জাতীয় আরো খবর
Copyright (c) 2022 ourpositivebangladesh.com
Design & Development By MD Arafat Rahman